দেশে প্রতি বছর আক্রান্ত ১০ কোটি, মেরুদণ্ডের এই সমস্যা আপনার নেই তো? - Learn and Let others to Learn
এটা হলো শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত ওয়েবসাইট।এখানে বইয়ের কাজ,এক্সট্রা কোয়েশ্চন আনসার,গ্রামার ও কোয়েশ্চন ব্যাংকের উত্তর পাওয়া যাবে । এটা হলো শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত ওয়েবসাইট।এখানে বইয়ের কাজ,এক্সট্রা কোয়েশ্চন আনসার,গ্রামার ও কোয়েশ্চন ব্যাংকের উত্তর পাওয়া যাবে । এটা হলো শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত ওয়েবসাইট।এখানে বইয়ের কাজ,এক্সট্রা কোয়েশ্চন আনসার,গ্রামার ও কোয়েশ্চন ব্যাংকের উত্তর পাওয়া যাবে ।
|

Wednesday, August 12, 2020

দেশে প্রতি বছর আক্রান্ত ১০ কোটি, মেরুদণ্ডের এই সমস্যা আপনার নেই তো?

কোভিড ১৯ ভাইরাস আসায় অন্য অসুখ বিসুখ কিছুটা ব্যাকফুটে গেলেও ব্যথা বেদনা কিন্তু ‘কমলি’-র মতোই নাছোড়বান্দা। হাঁটু-কোমরের ব্যথা থেকে শুরু করে ঘাড়ে ব্যথা, কোনও ব্যথাই ছেড়ে কথা বলছে না। তা সে সাধারণ মানুষই হোক কিংবা  সেলেব্রিটি। বিশেষ করে শিরদাঁড়ায় ব্যথা হলে হাঁটাচলা বা স্বাভাবিক কাজকর্ম করাও মুশকিল হয়ে ওঠে।
মেরুদণ্ডের ব্যথার বিভিন্ন কারণের মধ্যে আছে স্লিপ ডিস্ক, যার ডাক্তারি নাম ‘ডিস্ক হার্নিয়েশন’। অতিরিক্ত লম্বা এবং অত্যন্ত বেঁটে  চেহারার পুরুষদের মধ্যে স্লিপ ডিস্কের ঝুঁকি বেশি, বললেন অর্থোপেডিক সার্জন সুদীপ্ত ঘোষ। স্লিপ ডিস্কের আর এক রিস্ক ফ্যাক্টর ওবেসিটি অর্থাৎ বাড়তি ওজন। মূলত মেরুদণ্ডের তলার দিকের দু’টি হাড়ের মধ্যবর্তী ডিস্ক স্লিপ করে বেরিয়ে এসে স্নায়ুতে চাপ দিলেই ভয়ানক ব্যথার সূত্রপাত হয়, চিকিৎসা না করালে ব্যথার প্রকোপ বাড়তেই থাকে বললেন সুদীপ্তবাবু।
ঠিক কী হয়
আমাদের মেরুদণ্ড ২৬টি ছোট্ট ছোট্ট হাড়ের টুকরো দিয়ে তৈরি। দু’টি হাড়ের টুকরোর ঘর্ষণ প্রতিরোধ করতে মাঝখানে থাকে কুশনের মত ডিস্ক। নরম জেলি  দিয়ে ভরা এই ডিস্ক হাড় ক্ষয়ে যাওয়া আটকে দেয়, বললেন সিনিয়র কনসাল্ট্যান্ট স্পাইন সার্জন সৈকত সরকার। সামনে ঝুঁকে ভারী জিনিস তুলতে গেলে, মেরুদণ্ডের সংলগ্ন পেশি দুর্বল থাকলে বা দূর্ঘটনায় চোট লেগে কিংবা বেশি বয়সে হাড় ক্ষয়ে পেশি দুর্বল হওয়ার জন্য সামান্য চাপ পড়লেই ডিস্ক স্থানচ্যুত হয়, তাই  এই ব্যাপারে সতর্ক থাকতে পরামর্শ দিলেন সৈকত সরকার। এরকম হলে নার্ভ রুটে চাপ পড়ে শুরু হয় প্রবল ব্যথা। এরই নাম স্লিপ ডিস্ক বা ডিস্ক হার্নিয়েশন। শুধুমাত্র আমাদের দেশেই প্রতি বছর ১০ মিলিয়ন অর্থাৎ এক কোটি মানুষের স্লিপ ডিস্কের সমস্যা হয়।

ব্যথার চোটে হাঁটাচলায় অসুবিধা
ডিস্ক পিছলে গেলে প্রথম এবং প্রধান উপসর্গ হল ব্যথা। অবশ্য কখনও কখনও যৎসামান্য ব্যথাও স্লিপ ডিস্কের উপসর্গ হতে পারে। অল্প ব্যথা অগ্রাহ্য করলে পরে ভোগান্তির মাত্রা বাড়ে, এ ব্যাপারে দুই চিকিৎসকের একই মত।  সৈকতবাবু জানালেন কোমর থেকে পায়ের দিকে বা ঘাড় থেকে হাতে ব্যথা নেমে আসে, ঝিনঝিন করে। শুরুতে অল্প অল্প ব্যথা যা পরের দিকে অসহ্য হয়ে দাঁড়ায়। কত তীব্র ব্যথা হবে তা নির্ভর করে ডিস্কের মধ্যের জেলি কতটা বেরিয়ে এসেছে আর নার্ভ রুটকে কীভাবে চাপ দিচ্ছে, তার উপর।

সুদীপ্তবাবু জানালেন, ঘাড় আর  কোমরের অংশে বেশি নড়াচড়া হয় বলে এই দুই অংশেই ডিস্ক হার্নিয়েশনের সম্ভাবনা বেশি। ঘাড়ে সমস্যা হলে ব্যথা কাঁধ হয়ে হাত পর্যন্ত পৌঁছয় আর কোমরে সমস্যা হলে ব্যথা বা ঝিনঝিন ভাব পা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। কখনও কখনও হাত পায়ের জোর কমে যেতে পারে। সুদীপ্ত ঘোষ বললেন যে, অনেক সময় বিশেষ কিছু নার্ভে চাপ দেওয়ায় মলমূত্র ত্যাগেও অসুবিধা হতে পারে।
ইনকন্টিনেন্স অর্থাৎ প্রস্রাব বা মল ধরে রাখতে অসুবিধা হয়। শৌচাগার যাওয়ার আগেই পোশাক নষ্ট হয়ে যায়। আবার অনেক সময় প্রচণ্ড বেগ এলেও প্রস্রাব আটকে গিয়ে বিপত্তি হতে পারে।  তাই কোনও ব্যথা বেদনা হলে নিজেরা পেইন কিলার না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার
ছেলেদের ঝুঁকি দ্বিগুণ বেশি
যে কোনও বয়সেই ডিস্ক প্রোলাপ্স হতে পারে। তবে ছেলেদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।  সাধারণত ৩০ থেকে ৫৫ বছর বয়সি মানুষের স্লিপ ডিস্কের সম্ভাবনা থাকলেও পুরুষদের মধ্যে এই অসুখের ঝুঁকি বেশি। মেয়েদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ সমস্যা দেখা যায় পুরুষদের মধ্যে, জানালেন সৈকত সরকার। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ৪০ উত্তীর্ণদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। আর যাঁরা নাগাড়ে বসে ডেস্ক ওয়ার্ক করেন বা যাঁদের ভারী জিনিস তুলতে হয়, তাঁদেরও ঝুঁকি বেশি।  নিয়মিত শরীরচর্চা করে পিঠ ও কোমরের পেশি টোনড রাখতে পারলে এই সমস্যার ঝুঁকি কমানো যায় বলে সৈকতবাবু মনে করেন।
ওয়েট বিয়ারিং এক্সারসাইজ সাবধানে করুন

সামনে ঝুঁকে ভারী জিনিস তোলা স্লিপ ডিস্কের অন্যতম কারণ। জিমে গিয়ে অনেকেই এই কাজটি করেন ও ডিস্ক হার্নিয়েশনের সমস্যায় ভোগেন। এছাড়া বেকায়দায় পড়ে গিয়ে চোট, বাসে, অটোতে বা রিকশাতে আচমকা জোর ঝাঁকুনি,  অতিরিক্ত কায়িক শ্রম, ভারী জিনিসে শরীরচর্চা ইত্যাদি নানা কারণে ডিস্ক হার্নিয়েশনের ঝুঁকি বাড়ে। এছাড়া নাগাড়ে বসে থাকলে আর মোটাসোটা চেহারা অর্থাৎ বাড়তি ওজনও স্লিপ ডিস্কের ঝুঁকি বাড়ায়। অন্যদিকে শুয়ে বসে অলস জীবন কাটালে  মেরুদণ্ডের আশপাশের পেশি দুর্বল হয়ে গিয়ে কশেরুকার মাঝের কুশন বেরিয়ে আসতে পারে। সৈকতবাবু জানালেন, রোগীকে দেখলে অসুখটি সম্পর্কে ধারণা করা যায়। এমআরআই করে স্লিপ ডিস্ক নিশ্চিত করা হয়।

No comments:

Post a Comment