প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের জীবনী Prafulla Chandra Ray Biography in Bengali - Learn and Let others to Learn
এটা হলো শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত ওয়েবসাইট।এখানে বইয়ের কাজ,এক্সট্রা কোয়েশ্চন আনসার,গ্রামার ও কোয়েশ্চন ব্যাংকের উত্তর পাওয়া যাবে । এটা হলো শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত ওয়েবসাইট।এখানে বইয়ের কাজ,এক্সট্রা কোয়েশ্চন আনসার,গ্রামার ও কোয়েশ্চন ব্যাংকের উত্তর পাওয়া যাবে । এটা হলো শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত ওয়েবসাইট।এখানে বইয়ের কাজ,এক্সট্রা কোয়েশ্চন আনসার,গ্রামার ও কোয়েশ্চন ব্যাংকের উত্তর পাওয়া যাবে ।
|

Friday, October 01, 2021

প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের জীবনী Prafulla Chandra Ray Biography in Bengali

 


প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের জীবনী

Prafulla Chandra Ray Biography in Bengali

প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের জীবনী – Prafulla Chandra Ray Biography in Bengali : বিলাতের বিখ্যাত ম্যাঞ্চেষ্টার গার্ডিয়ান সংবাদপত্রে একটি প্রবন্ধে লেখা হয় “ মিঃ গান্ধী যদি কোনও প্রকারে আর দুজন পি . সি . রায় সৃষ্টি করতে পারতেন তবে ভারতবর্ষ এক বছরেই স্বরাজ পেয়ে যেত । ” 

কে এই পি . সি . রায় ? ইনিই আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় । ইনিই দেশে বিপ্লব সৃষ্টি করেছিলেন । পরাধীন ভারতে এনেছিলেন কর্মের উদ্দীপনা । তাই আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রকে বাংলার শিল্পগুরু বললে অত্যুক্তি করা হবে না । 

 কর্মযােগী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় এর একটি সংক্ষিপ্ত জীবনী । প্রফুল্ল চন্দ্র রায় এর জীবনী – Prafulla Chandra Ray Biography in Bengali বা প্রফুল্ল চন্দ্র রায় এর আত্মজীবনী বা (Prafulla Chandra Ray Jivani Bangla. A short biography of Prafulla Chandra Ray. Prafulla Chandra Ray Birth, Place, Life Story, Life History, Biography in Bengali) প্রফুল্ল চন্দ্র রায় এর জীবন রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

প্রফুল্ল চন্দ্র রায় কে ছিলেন ? Who is Prafulla Chandra Ray ?

প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (Prafulla Chandra Ray) ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাঙালি রসায়নবিদ, শিক্ষক, দার্শনিক ও কবি। প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (Prafulla Chandra Ray) বেঙ্গল কেমিক্যালসের প্রতিষ্ঠাতা এবং মার্কারি (I) নাইট্রেটের আবিষ্কারক। দেশি শিল্পায়ন উদ্যোক্তাও ছিলেন প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (Prafulla Chandra Ray)। তার জন্ম অবিভক্ত বাংলার যশোর জেলায় (বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্গত)। প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (Prafulla Chandra Ray) বৈজ্ঞানিক জগদীশ চন্দ্র বসুর সহকর্মী ছিলেন।

কর্মযােগী আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের জীবনী – Prafulla Chandra Ray Biography in Bengali :

নাম (Name)পি . সি . রায় বা প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (Prafulla Chandra Ray) 
জন্ম (Birthday)২ আগস্ট ১৮৬১ (2nd August 1861)
জন্মস্থান (Birthplace)খুলনা, বারুলী
অভিভাবক (Parents)/পিতামাতাহরিশ চন্দ্র রায় ও ভুবনেশ্বরী দেবী
জাতীয়তাভারতীয়
কর্মক্ষেত্রঅজৈব রসায়ন

জৈব রসায়ন

রসায়নের ইতিহাস

প্রতিষ্ঠানপ্রেসিডেন্সি কলেজ

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞান কলেজ (বর্তমানে রাজাবাজার সায়েন্স কলেজ)

পরিচিতির কারণভারতীয় রসায়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠাতা; ভারতীয় রাসায়নিক শিল্প প্রতিষ্ঠাতা
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার১৯১২ Companion of the Order of the Indian Empire (সিআইই)

১৯১৯ নাইট ব্যাচেলর

১৯০২ ফেলো অফ ক্যেমিক্যাল সোসাইটি (এফসিএস)

১৯৩৫ ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য (এফএনআই)

১৯৪৩ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অব সায়েন্সের সদস্য (এফআইএএস)

মৃত্যু (Death)১৬ জুন ১৯৪৪ (16th June 1944)

প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের জন্ম – Prafulla Chandra Ray Birthday :

 ১৮৬১ খ্রিঃ ২ রা আগস্ট কপােতাক্ষ নদীর তীরে খুলনা জেলার রাডুলি গ্রামে প্রফুল্লচন্দ্রের জন্ম হয়।

প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের পিতামাতা – Prafulla Chandra Ray Parents :

 তার বাবা ছিলেন হরিশচন্দ্র রায় । প্রফুল্লচন্দ্রের মা ভুবনমােহিনী দেবী । তার বাবা গ্রামে নিজের বাড়িতেই একটি স্কুল করলেন । 

প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের শৈশবকাল – Prafulla Chandra Ray Childhood :

 চার বছর বয়সের সময় প্রফুল্লচন্দ্রের হাতেখড়ি হয় । তিনি তার ওই গ্রামের স্কুলেই বিদ্যারম্ভ করেন । তার শৈশবের ডাকনাম ছিল ‘ ফুনু । ফুনু ছােটবেলায় খুব শান্তশিষ্ট ছিলেন না ।

প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের শিক্ষাজীবন – Prafulla Chandra Ray Education Life :

 পাঠশালায় পড়া শেষ করে প্রফুল্লচন্দ্র মধ্য ইংরেজী স্কুলে ভর্তি হলেন । বাড়ির মধ্যে স্কুল থাকায় কোন অসুবিধা দেখা দিল না । সেখানে নয় বছর বয়সে তিনি মাইনর ( যষ্ঠ শ্রেণী ) পাশ করেন । ছেলেকে উচ্চশিক্ষা দেওয়ার জন্য হরিশচন্দ্র সপরিবারে কলকাতায় চলে আসেন । কলকাতার হেয়ার স্কুলে তাকে ভর্তি করেছিলেন ।

 প্রফুল্লচন্দ্র রাত তিনটার সময় উঠে পড়তে বসতেন । তিনি বলতেন কোনও কঠিন বা দরকারি বিষয় পড়তে হলে ওই সময়টাই ছিল তার পক্ষে প্রশস্ত সময় । কারণ তখন ঘরে বা বাইরে কোনও কোলাহল থাকত না । অল্প সময়ের মধ্যেই তা পড়ে আয়ত্ত করতে পারতেন ।

 একদিন রাতে দেখলেন তার প্রদীপে তেল নেই । এইসুন্দরসময়টা তার বৃথা চলে যাবে ? ঘরের কোণে শিশিতে মাথায় মাখার জন্য যে সুগন্ধি তেল ছিল তাই প্রদীপে ঢেলে আলাে জ্বালালেন ও পড়া শেষ করলেন । প্রফুল্লচন্দ্রের মাথা উচ্চ শুষ্ক কেন — তা মা জিজ্ঞেস করতে তিনি বললেন , তেল মেখেছি — বড্ড গরম পড়েছে তাই মাথাটা এমন দেখাচ্ছে । এরপর প্রফুল্লচন্দ্র অসুস্থ হয়ে পড়লেন । স্কুলে যাওয়া বন্ধ হল । আমাশয় রােগে ভুগে একেবারে দুর্বল হয়ে পড়লেন । দুটি বছর এই রােগে শয্যাশায়ী হয়ে রইলেন ।

প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের ইংরেজি ও ইতিহাস সাহিত্যের উপর অনুরাগ :

 কিন্তু প্রফুল্লচন্দ্র পড়াশুনা ছেড়ে দিলেন না । তিনি লাইব্রেরির নানারকম বই মন দিয়ে পড়তে লাগলেন । ইংরেজী সাহিত্য ও ইতিহাসের প্রতি তার ভয়ানক অনুরাগ জেগে উঠল । বালক বয়সে প্রফুল্লচন্দ্রের যে জীবন শুরু হয়েছিল , জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি তেমনই ছাত্র ছিলেন । 

 দু’বছর পরে অ্যালবার্ট স্কুলে তাকে ভর্তি হতে হল । সহজ সরল ব্যবহার ও ভাল পড়াশুনার জন্য কিছুদিনের মধ্যে একদল শিক্ষকের বিশেষ প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেন ।

 বাল্যকাল হতেই প্রফুল্লচন্দ্র ছিলেন লাজুক প্রকৃতির । সমবয়সী ছেলেদের সঙ্গে বিশেষ মিশতেন না । অধ্যয়ন , কৃষিকাজ , সাঁতার কাটা , নৌকা চালনা এবং হাল্কা ব্যায়ামই ছিল তার কাছে অতি প্রিয় । ১৮৭৮ খ্রি : প্রফুল্লচন্দ্র অ্যালবার্ট স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষা দিলেন । কিন্তু ফল বিশেষ ভাল হল না । 

বিদ্যাসাগরের গড়া মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশনে ভর্তি ও বিজ্ঞান চর্চা :

 প্রবেশিকায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর বিদ্যাসাগরের গড়া মেট্রোপলিটন ইনষ্টিটিউশনে ভর্তি হলেন । এফ . এ কোর্সে সেই রসায়নশাস্ত্র অবশ্য পাঠ্য বিষয় ছিল । প্রফুল্লচন্দ্র রসায়ন শাস্ত্রের প্রতি বিশেষ আকৃষ্ট হয়ে পড়লেন । প্রফুল্লচন্দ্র এক সহপাঠী বন্ধুর বাড়িতে ল্যাবরেটরী স্থাপন করে সেখানেই নানা বিষয় পরীক্ষা করতে লাগলেন । এছাড়া সাহিত্য , ইতিহাস , ভূগােলও তার প্রিয় বিষয় ছিল । বিজ্ঞানচর্চার জন্য তিনি বাড়িতে একটি পরীক্ষাগার বা ল্যাবরেটরি স্থাপন । করেছিলেন। 

প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের কলেজ জীবন – Prafulla Chandra Ray College Life :

 ১৮৮০ খ্রিঃ প্রযুল্লচন্দ্র মেট্রোপলিটন কলেজ থেকে এফ . এ . পরীক্ষায় পাশ করে সেই কলেজেই তিনি বি . এ . পড়তে লাগলেন । বি . এ পাশ করার পর ‘ গিল ক্রাইস্ট ‘ বৃত্তি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হন । এবং বিলেত যাওয়ার বৃত্তি লাভ করেন ।

প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের বিলেতে শিক্ষাজীবন – Prafulla Chandra Ray Abroad Education Life :

 একুশ বছর বয়সে বিলেতের এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে তার প্রিয় বিষয় রসায়ন শাস্ত্র নিয়ে অধ্যয়ন শুরু করেন এবং কঠোর পরিশ্রম করে কৃতিত্বের সঙ্গে ১৮৮৫ খ্রিঃ বি . এস . সি . পাশ করেন । বিলেতে দু’বছর থাকার পর প্রফুল্লচন্দ্র দেশে ফিরে আসেন । এখানেই তার গৌরবময় ছাত্রজীবন শেষ হয় ।


প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের আত্মজীবনী – Prafulla Chandra Ray Autobiography :

 সারাজীবন তিনি পড়াশুনা করেছেন । তার আত্মজীবনীতে তিনি লিখেছেন , “ আজো আমি জ্ঞানের অনুশীলন করিয়া থাকি আজীবন । আমি ছাত্রভাবেই আছি । পৃথিবীতে যত্ন কিছুসৎ চিন্তা আর উৎকৃষ্ট ভাব আছে , যত কিছুউদ্দীপনা সৃষ্টি করে এবং মানুষের হৃদয়ে প্রেরণা । দেয় তার সবই পুস্তকে নিহিত । ” প্রফুল্লচন্দ্র প্রকৃতই ছিলেন বিজ্ঞানের সাধক , মানব দরদী । শিক্ষার জন্য আমৃত্যু পর্যন্ত অধ্যয়ন করে গেছেন । 

প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের আবিষ্কার – Prafulla Chandra Ray Invention :

 ১৮৯৫ খ্রীষ্টাব্দে তিনি পারদ ও নাইট্রিক এ্যাসিড নিয়ে গবেষণা করতে করতে মারকিউরাস নাইট্রাইট আবিষ্কার করেন । এতে বিশ্বে তার নাম ছড়িয়ে পড়ে ।

প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের কর্মজীবন – Prafulla Chandra Ray Work Life :

 তিনি তার সাধনা ও প্রচেষ্টা দ্বারা বাঙালি জাতির কোনাে উন্নতিবিধান করা যায় কিনা ভাবতে থাকেন । একদিন তিনি বুঝতে পারলেন যদি দেশীয় ভেষজদ্রব্য ব্যবহার করে কোনও শিল্প – কারখানা গড়ে তােলা যায় তাতে দেশ ওষুধ ও রাসায়নিক দ্রব্যসামগ্রীতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠবে । এছাড়া বহুলােকের কর্মসংস্থানও হবে সেখানে । 

 এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে তিনি মাত্র ৮০০ টাকা মূলধন নিয়ে একটা ওষুধ তৈরির কারখানা শুরু করলেন । নাম দিলেন ‘ বেঙ্গল কেমিক্যাল এ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস ‘ । এটাই পরবর্তীকালে বিশাল শিল্প কারখানায় রূপান্তরিত হয় ।

[আরও দেখুন, CLASS VII , CLASS -VIII , CLASS-IX ]

স্বাধীনতা আন্দোলনে প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের ভূমিকা – The role of Prafulla Chandra Roy in the independence movement :

 স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী বীরদের প্রতি প্রফুল্লচন্দ্রের গভীর সহানুভূতি ছিল । ১৯২১ খ্রিঃ অসহযােগ আন্দোলনের সময়ে গান্ধীজির খদ্দর – প্রচারের উদ্যোক্তাদের অন্যতম প্রধান ছিলেন তিনি ।

প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের প্রতিষ্ঠান – Prafulla Chandra Ray Institution :

 দেশের বিজ্ঞানচর্চার উন্নতিকল্পে তারই উৎসাহ ও অর্থসাহায্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ইন্ডিয়ান কেমিক্যাল সােসাইটি । 

 প্রফুল্লচন্দ্র রায় নিজের ব্যক্তিজীবনের প্রতি ছিলেন একান্তই উদাসীন । তিনি বিজ্ঞান গবেষণা ও কারখানা নিয়ে সর্বক্ষণ ব্যস্ত থাকার কারণে সংসার গড়ার কথাও মনে করতে পারেননি । তিনি থেকে যান চিরকুমার ।

প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের গ্রন্থ – Prafulla Chandra Ray Book :

 প্রফুল্লচন্দ্র মনে করতেন বিজ্ঞানে ও শিল্পে উন্নত না হলে কোনাে জাতিবড়াে হতে পারে না । তিনি মাতৃভাষায় বিজ্ঞান পড়াবার বিশেষ পক্ষপাতী ছিলেন । প্রফুল্লচন্দ্র তার জীবনের সমস্ত সঞ্চিত অর্থ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিজ্ঞানের গবেষনার জন্য দান করে গেছেন । তার লেখা হিন্দু রসায়নের ইতিহাস একখানি মহামূল্যবান । গ্রন্থ । 

প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের মৃত্যু – Prafulla Chandra Ray Death :

 বাঙালির গৌরবমহান কর্মযােগী আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় ১৯৪৪ খ্রিঃ ১৬ ই জুন ৮৩ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । বাঙালি । জাতি যুগ যুগ ধরে এই কর্মবীরকে কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করবে । অনুসরণ করবেতার আদর্শকে ।


No comments:

Post a Comment